For Recent News Click

তবুও অনেক প্রাপ্তি

হাবিবুল বাশার হাবিবুল বাশার
করে ফেললাম! সাকিব টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেওয়ার পর এটাই ছিল আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া। শুধু আমি নই, কাল স্টেডিয়ামের ক্যাপ্টেনস বক্সে আমার পাশে সাবেক অধিনায়কেরা যাঁরা ছিলেন—ফারুক ভাই, লিপু ভাই, নান্নু ভাই—সবাই দেখলাম মাথা নাড়ছেন।
আমি এখনো বলব, টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটি ভালো হয়নি। কাল মিরপুরে পুরো ম্যাচ দেখেছি। মাঠে নামিনি। তবে আমার অভিজ্ঞতা বলছিল, খুব বেশি শিশির পড়েনি। জানি না বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট পরশু রাত নয়টা পর্যন্ত মাঠে ছিল কি না। হয়তো ছিল। তখনই হয়তো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, টস জিতলে ফিল্ডিং।
‘টস জিতলে ব্যাটিং নাও’ এটা তো ক্রিকেটের শাশ্বত এক বাণী। দিবারাত্রির ম্যাচে তো আরও বেশি প্রযোজ্য। দিনের ম্যাচে সকালের উইকেটে আর্দ্রতা থাকে। আর এখানে ম্যাচ শুরু দুপুরে। তেমন আর্দ্রতা থাকে না। দিবারাত্রির ম্যাচে ব্যাটিং করার সুবর্ণ সময় দুপুর থেকে সন্ধ্যা। কাল খেয়াল করে দেখবেন, ভারত ওই সময় কী সাবলীল ব্যাটিং করেছে। টস জিতেও আমরা ব্যাটিং করার সুযোগটা নিলাম না।
সিমিং উইকেটেরও অভাব বোধ করেছি। ভারতের বিপক্ষে আমরা যে দুটো ম্যাচ জিতেছি, দুটোই ছিল সিমিং উইকেট। ওদের বিপক্ষে মরা অথবা স্পিন-সহায়ক উইকেট বানিয়ে লাভ নেই। ওরা স্পিনের বিপক্ষে সেরা দল। ওদের পেস দিয়েই ঘায়েল করতে হয়।
সে ক্ষেত্রে একটা প্রান্তে মাশরাফি থাকলে সুবিধাটা আমরা পেতাম। অন্য প্রান্তে শফিউল বা রুবেল—যে থাকত, নির্ভার থাকতে পারত। ভারতকে প্রথমে ধাক্কা দিতে পারিনি বলেই ওদের ওই ৩৭০ রান।
প্রথম পাওয়ার প্লে আসলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই ১০ ওভারে প্রতিপক্ষ ৯০ রান তুলে ফেললে ওই গতিটাই তো ২৬০-৭০ রান এনে দেয়। আমাদের প্রথম পাওয়ার প্লেতে রান কম দেওয়ার দিকে আরও মনোযোগ দিতে হবে। পেসাররা রান দিয়ে দিলে পরে স্পিনারদের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়, কাল যেটি হয়েছে।
৩৭০ রান করার পরই ম্যাচটা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এটা হয়তো বুঝতে পেরেছেন, আমার কলমে একটু যেন আক্ষেপের সুর। আক্ষেপ, কারণ ভারত বড় রান করেও নির্ভার থাকতে পারেনি। আমরা ওদের চাপেই ফেলে দিয়েছিলাম। সেটি ইমরুলের দারুণ শুরুর কারণে। তামিম তো আমার দেখা সবচেয়ে পরিণত ব্যাটিং করেছে এদিন। আসলে এত বড় রান তাড়া করে জেতার অভিজ্ঞতা না থাকাও আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে।
তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচটা শুরুতেই খেলে ফেললাম। এ থেকে অনেক আত্মবিশ্বাসও পাওয়া গেছে। রানরেটের হিসাব পরে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে পরাজয়ের ব্যবধান যথাসম্ভব কমাতে পারায় ভালোই হয়েছে। বিশ্বকাপে আমাদের সর্বোচ্চ স্কোর করেছি। এই আত্মবিশ্বাস পরের ম্যাচে কাজে দেবে। ব্যাটিং দারুণ হয়েছে, ফিল্ডিংও। ফলে সব মিলে আমাদের জন্য এটি অনেক প্রাপ্তির ম্যাচ। আর বিশ্বকাপও তো মাত্রই শুরু।

0 comments:

Post a Comment